নিজের জমি বিক্রি করে ২০ লাখ টাকা বাসায় রেখেছিলেন পুরান ঢাকার ওয়ারীর বাসিন্দা মো. সাব্বির খান। সেই টাকায় দৃষ্টি যায় দূর সম্পর্কের আত্মীয় নায়না আফরিন মুনার। টাকা লুটের জন্য ডাকাত ভাড়া করে সে। বাসায় ডাকাতি হলেও লুটপাটে ব্যর্থ হয় ডাকাত দল। এতে সাব্বির খানের স্কুলপড়ুয়া মেয়ে সিনহা জেবিন খানকে (১৩) অপহরণ করে তারা। এরপর দাবি করে সেই ২০ লাখ টাকা। নইলে মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ডিবি পুলিশ স্কুলছাত্রী সিনহা জেবিনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করলে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।
পুরান ঢাকার ওয়ারীর নামকরা সিলভার ডেল স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সিনহা জেবিন খান। গত মঙ্গলবার ওই স্কুল থেকেই অপহরণকারী চক্র শিশুটিকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে মুক্তিপণের ২০ লাখ টাকা চায়। তবে ডিবি পুলিশ ওই রাতেই উদ্ধার করে তাকে। মুক্তিপণের ফাঁদ পেতে গ্রেফতার করা হয় নায়না আফরিন মুনা, শামীম হোসেন ও হাসিবুল হাসান শান্তকে। পরের দিন অপহরণের ঘটনায় আদালতে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দেয় তারা।
অভিযানের নেতৃত্বে থাকা ডিবি পুলিশের ডেমরা জোনাল টিমের সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজমুল হাসান ফিরোজ বলেন, নায়না আফরিন মুনা অপহৃত ছাত্রী সিনহা জেবিনের মামাতো বোন। ছোটবেলায় মুনার বাবা মারা গেলে সে জেবিনের বাবা-মায়ের কাছে বড় হয়। কিন্তু ২০ লাখ টাকার লোভে বাসায় ডাকাতি ও নিজের মামাতো বোনকে অপহরণের মতো ঘটনা ঘটায় সে।
ডিবির এ কর্মকর্তা জানান, তারা অভিযোগ পেয়েই ঘটনার তদন্ত শুরু করেন। এক পর্যায়ে জানতে পারেন অপহৃত ছাত্রীর মামাতো বোন মুনা ঘটনার সঙ্গে জড়িত। কিন্তু অপহরণ করিয়ে এই মুনাই ছাত্রীর মায়ের সঙ্গে থানায় যায়। এজন্য সন্দেহ করাও কষ্টকর ছিল তাকে। শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তিগত তদন্তে তার অপরাধের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে শনাক্ত করা হয় অপর দুই অপহরণকারীকে। পরে ধানমণ্ডি এলাকায় অপহরণের টাকা বিনিময়ের ফাঁদ পেতে অপহরণকারী শামীমকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর শঙ্কর এলাকা থেকে শান্তকে গ্রেফতার করে উদ্ধার করা হয় ছাত্রীকে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা একটি মোবাইল ফোনের সূত্রে মেলে অপহরণের আগে ডাকাতির তথ্য।
ডিবির অপর একজন কর্মকর্তা বলেন, মুনার স্বামী বিদেশে থাকেন। এরপর সে ঢাকায় এক তরুণের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে তালাক দেয় স্বামীকে। এক পর্যায়ে অপরাধের চোরাগলিতে পা দেয় সে। সেখানেই পরিচয় হয় শামীম হোসেন ও হাসিবুল হাসান শান্তর সঙ্গে। তারা তিনজনই স্বীকার করেছে, মুক্তিপণের টাকা না পেলে স্কুলছাত্রীকে মেরে ফেলত তারা।
গ্রেফতার মুনা জানিয়েছে, এতকিছু করেছে সে মূলত ২০ লাখ টাকার জন্যই। অপহরণের তিন দিন আগে সিনহা জেবিনের কাপ্তানবাজারের বাসায় শান্ত ও শামীমকে ডাকাতি করতে পাঠিয়েছিল সে। সেখানে টাকা না পেয়ে একটি মোবাইল ফোন নিয়ে আসে তারা বাসা থেকে। এরপর তারা তিনজন মিলে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেয় সিনহা জেবিনকে।
শামীম ও শান্ত জানিয়েছে, মুনা ওই ছাত্রীকে কৌশলে স্কুল থেকে বের করে। এরপর তারা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ছিনিয়ে নেয় তার কাছ থেকে। এতে মনে হবে মুনার কোনো দোষ নেই। হাজারীবাগের একটি বাসাতে আটকে রাখা হয় মেয়েটিকে। তখন মেয়েটির পরিবারকে মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার জন্য বলে মুনা। সে যাতে ধরা না পড়ে এজন্য এমন নাটক সাজানো হয়
‘স্বজনদের হাতে তুলে দেয়া হলো যাদের লাশ’
: রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহদের......বিস্তারিত